জুলাই নায়কদের সাহস আর আত্মত্যাগকে স্মরণ করে এনডিএম'র চেয়ারম্যান ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ববি হাজ্জাজ বলেছেন, তারা আজ সর্বসম্মুখে নেই, কিন্তু তারাই সত্যিকারের নায়ক।
জুলাই-আগস্ট বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ৫ আগস্ট মঙ্গলবার তেজগাঁওস্থ আলোকি মিলনায়তনে REV FEST 2025 (AN ODE TO UNSUNG HEROES) এর আয়োজন করে এনডিএম।
ববি হাজ্জাজ বলেন, এই উৎসব কেবল একটি অনুষ্ঠান নয়, বরং একটি শ্রদ্ধাঞ্জলি তাদের প্রতি, যারা নিঃস্বার্থভাবে লড়েছে, দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে- আমাদের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাদের ত্যাগের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এই শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র দেশের বাইরে চলে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেনি, বরং দেশের জন্য মাঠে দাঁড়িয়েছে, অদম্য সাহস নিয়ে লড়েছে। স্বৈরাচারের পতনে তাদের রক্ত, ঘাম ও আত্মত্যাগের ভূমিকা ছিল অপরিসীম।
এনডিএম'র চেয়ারম্যান বলেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তখন লড়েছে, যখন অন্যরা পিছিয়ে গেছে। তারা দেশপ্রেমের নতুন সংজ্ঞা সৃষ্টি করেছে—প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশের তরুণরা দেশের মর্যাদা রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করতেও দ্বিধা করে না।
আজ আমরা একত্রিত হয়েছি REV FEST 2025-এ, যা এই তরুণ বীরদের প্রতি কৃতজ্ঞতার প্রতীক। সকল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য এই উৎসব, তাদের অবদানকে সম্মান জানানোর একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।
আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার নির্দেশনা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করার পর মানবজমিনকে এ তথ্য জানিয়েছেন। শনিবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ১৪ টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।
মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন তিনি আগামী চার পাঁচ দিনের মধ্যে নির্বাচনের কর্মসূচি এবং তারিখ ঘোষণা করবেন। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ মানবজমিনকে বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন বাংলাদেশ (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ মানবজমিনকে বলেন, আগামী ৫ই আগষ্টের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে যাবতীয় সবকিছু প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে জানাবেন।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর মহাসচিব মুঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি মানবজমিনকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা চার-পাঁচ দিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার করার কথা বলেছেন। আমরাও আমাদের দাবির বিষয় প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছি।
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)-এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ অভিযোগ করেছেন, পরাজিত আওয়ামী শক্তির আস্ফালন বলে দেয় দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট। এনসিপির অপরিপক্বতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘সরকারের চরম ব্যর্থতার কারণেই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এমন ধৃষ্টতা দেখানোর সাহস পেয়েছে। সর্ষের মধ্যে ভূত রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়া যাবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে শুদ্ধি অভিযান না চালানোয় পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে।’
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘গোপালগঞ্জে যারা সন্ত্রাস চালাচ্ছে, তারা কীভাবে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়? কাদের ছত্রছায়ায় তাদের এমন দাপট? প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে মিছিল করলেও তাদের এখনো আইনের আওতায় আনা হয়নি।’
বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়নে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে চিরুনি অভিযান চালানোর আহ্বান জানান এনডিএম চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, প্রয়োজনে অবসরে যাওয়া সৎ পুলিশ কর্মকর্তাদের আবার কাজে লাগাতে হবে।
এ সময় ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘আগামী রোজা শুরুর আগেই জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে।’
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক স্পষ্ট উচ্চারণের নাম। সমসাময়িক রাজনীতি, নির্বাচন, সংস্কার ও তরুণদের ভূমিকা নিয়ে তিনি বরাবরই সরব। ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের পর তার রাজনৈতিক সক্রিয়তা ও ভাবনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। তিনি শুধু রাজনীতির একজন কুশলী নন, বরং একজন চিন্তাশীল, তরুণবান্ধব ও সাহসী নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছেন। নতুন বাংলাদেশে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা, জবাবদিহির দাবি ও নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে তার ভাবনা তরুণ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। দেশের রাজনৈতিক গতিপথ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, শিক্ষাব্যবস্থা এবং তরুণ নেতৃত্ব নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি। দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস-এর পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সৈয়দ জুল আর্শিল।
এনডিএম-এর যাত্রা ৮ বছর পূর্ণ করলো। শুরুর প্রত্যাশাগুলোর কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে?
আমরা যে প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছিলাম, সেটার সবটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে তা বলা যাবে না। এটা অবশ্যই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে জুলাইয়ে গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা মনে করি যে, অনেকদূর একটা বিশাল ধাপ আমরা এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি। এনডিএম জন্ম নেয় একটা বিশ্বাসের ভিত্তিতে। বিশ্বাসটা হলো জবাবদিহিতামূলক গণতন্ত্র পুরো বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা। তো, আমরা ২০২৪ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত যে একটা স্বৈরশাসনে আবদ্ধ ছিলাম, যেখানে গণতন্ত্র ছিল না, জবাবদিহিতা ছিল না। সে জায়গা থেকে আমরা সকলে একত্রিতভাবে আন্দোলন করে এই গণ-অভ্যুত্থান ঘটাতে সক্ষম হলাম, আমার মনে হয় বিশাল একটা স্টেপ আমরা পার করেছি। তাই আমি বলব, আমরা যে কারণে আমাদের যাত্রা শুরু করেছি তার আশেপাশেও আমরা হয়ত যেতে পারিনি, তবে অনেক দূর আমরা আসতে সক্ষম হয়েছি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি চলছে। এক বছর আগে যে প্রত্যাশা ছিল নতুন বাংলাদেশকে নতুনভাবে দেখার, তার কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে বলে মনে করেন?
গণ-অভ্যুত্থানে আমাদের সবার অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা আছে। সবাই অনেক কষ্ট করেছি, তারপর বিজয়টা অর্জিত হয়েছে। তাই, এটা যেহেতু আমাদের অনেক কষ্টের অর্জন, সত্যিই আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি থাকবে, এটা স্বাভাবিক। এর সাথে কিছু অবাস্তব প্রত্যাশাও থাকবে, এটাও স্বাভাবিক। তো, সেরকম শুধু আমার না, সব ধরনের মানুষেরই তেমন প্রত্যাশা ছিল। আমরা কিছু জায়গায় আশাহত হয়েছি। তবে বাস্তবিকভাবে অর্জন অনেক হয়েছে। জাতীয়তাভাবে অর্জন অনেক হয়েছে। আমাদের যত আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল সব পূরণ হয়েছে তা না, কিন্তু কিছু পূরণ হয়েছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এই পূরণ কতটুকু হয়েছে তা না, গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা এই পূরণ করার যাত্রায় কতটুকু নিবেদিত হয়েছি। এটা যেহেতু হয়েছে, সেহেতু এটা আজ-কাল আমরা পূরণ করতে পারব।
আপনি একটি স্বনামধন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, যেখানে আপনি ১৬ বছর ধরে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। জুলাই আন্দোলনের সময় যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অবরুদ্ধ ছিল, তখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই রাজপথে সরব হয়ে আন্দোলনে নতুন মাত্রা এনেছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের পর দেখা গেল তারা ক্লাসে ফিরে গেল, আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা নানা সুবিধা ভোগ করল। এই বৈষম্য আপনি একজন শিক্ষক হিসেবে কীভাবে দেখেন?
বেশ কয়েকটি বিষয় আছে এখানে। একটা হলো যে, জুলাইয়ের ১৮, ১৯, ২০ এই তিনদিন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, এর সাথে স্কুল, কলেজ ছিল, মাদ্রাসা ছিল, তবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে যদি নেমে না আসতো, তবে ১৭ তারিখ রাতেই এই আন্দোলনের ইতি টানা হতো৷ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণরা যখন নেমে এসেছে, তাদের সাথেও আমি ছিলাম ১৭, ১৮, ১৯ তারিখে। এর আগেও আমরা রাজপথে ছিলাম তখন শিক্ষার্থীদের সাথে আমরা ছিলাম না। তো, ১৮, ১৯, ২০ যখন ছাত্রদের সাথে ছিলাম, তখন একটা জিনিস পরিষ্কার ছিল যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন একটি ধারা যোগ করে এই ১৮, ১৯, ২০ তারিখ। কারণ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একেকজন একেকভাবে কথাটা নিতে পারে। তবে যেকোনো সমাজে এলিট শ্রেণি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, এজন্যই এদের এলিট বলা হয়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ছাত্রছাত্রী যারা আছেন, তাদের বড় একটা অংশ এলিট পরিবারের সন্তান। তো, এলিট পরিবারের সন্তানরা যখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসলো এবং তারপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, তাদের উপর যখন আক্রমণ হলো, এইটা রাতারাতি পুরো আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দিলো৷ একটা হলো, অসংখ্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ-তরুণীরা রাজপথ দখল করতে সক্ষম হলো, আর আরেকটা হলো, তাদের উপর যখন আক্রমণ হলো, তাদের পরিবারবর্গও একরাতে সরকার-বিরোধী হয়ে গেল। আমি আগেও বলেছি, এসব পরিবারবর্গ সমাজের এলিট শ্রেণি, যেহেতু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ তারা বহন করতে পারে, অর্থনৈতিক সক্ষমতা তাদের আছে। এরপর সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে, এটা অসম্ভব হয়ে গেল। তারপর সময়ের ব্যাপার ছিল এবং ২/৩ সপ্তাহের মধ্যে সরকার চলেও গেল। তাই, এই ১৮, ১৯, ২০ পুরো আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বড় অবদান রাখে স্বৈরাচার সরকার পতনে।
এখন আসি ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে। প্রথমত তারা তাদের ক্যাম্পাসে পড়াশোনায় ফিরে যায়। কারণ তরুণদের দায়িত্ব ওই জায়গায়। সরকার পরিচালনা করা তরুণদের দায়িত্ব না। কিন্তু আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনে অনেক বিশাল কিছু ভুল আমরা দেখি। তখন হয়ত এত বিশাল ভুল মনে হয়নি। কিন্তু, এটা এখন পরিষ্কার ভুল যে সরকার গঠনে তরুণদের অংশগ্রহণ। একাত্তরে কিন্তু আসলেই বিপ্লব হয়েছিল, জুলাই কিন্ত বিপ্লব না, এটা গণ-অভ্যুত্থান। একাত্তরে বিপ্লব হবার পর, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিজ্ঞ, অভিজ্ঞ যারা সরকারি পরিচালানায় ছিলেন তারা মিলেই কিন্ত সরকার গঠনের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কোনো ছাত্রযোদ্ধা গিয়ে পার্লামেন্টে হঠাৎ করে বসেননি এবং নির্বাচন হয়েছিল। মানে ৭৩-এর নির্বাচন। আর ৭২ এ যে টেম্পোরারি সরকার দায়িত্ব নেয়, ৭০ এর নির্বাচন জয়ী কাঠামোগত সরকার। তো, এখানে তরুণরা কিন্তু সরকারে বসেন নাই। তাই এটা বিশাল একটা ভুল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দ্বারা হয়েছে। যেটি এখনো তারা টেনে যাচ্ছে। এই যে আমরা একটার পর একটা দেখছি যে এক তরুণ উপদেষ্টা বন্দুকের সামঞ্জস্য নিয়ে এয়ারপোর্টে ধরা পরেন। এবং এটা পুরোপুরি অবৈধ। মানে কোনোভাবে তার লাইসেন্স থাকতে পারে না, বাংলাদেশের আইনে সম্ভবই না। আরেকজন তরুণ উপদেষ্টা বলছেন মব ভায়োলেন্স ভালো। রাস্তাঘাটে সম্মিলিতভাবে পেটাচ্ছেন, এটা ভালো। তারা তরুণ, তাদের আমি দোষও দিই না। আমি দোষ দিই যারা তাদেরকে সরকারে অংশ করেছেন। এই জায়গা থেকে আপনি বলতেই পারেন, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনেক মূল্যায়ন হয়েছে। উল্টোদিকে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণরা এর ভেতরে জড়াননি। হ্যাঁ, তাদেরকে কিছু জায়গায় অসম্মান করা হয়েছে, এটাও আমি দেখেছি এবং খুব দুঃখের সাথে দেখেছি। কিন্ত আমি বিশ্বাস করি, আগামীর ভবিষ্যৎ তাদের হাতেই রয়েছে।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ যখন উঠেছে, তখন আরেকটি বিষয় জানতে চাই। আপনি কী মনে করেন—জাতীয় সংসদে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থীরা আগামীতে অংশ নিতে পারবে? কারণ জুলাই আন্দোলনের বড় একটি সাফল্য তো এসেছিল তাদের নেতৃত্ব থেকেই।
আমি মনে করি, আপনি বিষয়টিকে কিছুটা সরলভাবে দেখছেন। প্রথমত, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে তুলনামূলকভাবে নতুন একটি ধারণা। এর যাত্রা শুরু হয় মাত্র ১৯৯২ সালে। এরপর ’৯০ দশকের শেষদিকে গিয়ে শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে ভর্তি হতে শুরু করে। অর্থাৎ, বড়জোর ২৫ বছরের ইতিহাস। প্রথমদিকে খুব অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী ছিল, পরে ধীরে ধীরে সেই সংখ্যা বেড়েছে। আর জাতীয় সংসদ এমন এক জায়গা যেখানে কেবল ডিগ্রি থাকলেই হয় না, প্রয়োজন রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, মাঠের বাস্তবতা সম্পর্কে জ্ঞান এবং জনগণের আস্থা। এসব অর্জন করতে সময় লাগে, বয়স লাগে, ধারাবাহিকতা লাগে।
আমরা সর্বশেষ অংগ্রগ্রহণমূলক নির্বাচন দিখেছি ২০০৮-২০০৯ সালে। এরপর ১৬ বছর পেরিয়ে গেছে। সে সময় পর্যন্ত যারা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছে, তাদের সংখ্যা ছিল খুবই সীমিত। ফলে সংসদে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের উপস্থিতি কম। এটা খুব স্বাভাবিক।
দ্বিতীয়ত, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়ে, তাদের পরিবারের আর্থিক বিনিয়োগ অনেক বেশি থাকে। স্বভাবতই পরিবারগুলো চায় না তাদের সন্তানরা রাজনীতির মতো ঝুঁকিপূর্ণ পথে হেঁটে যাক। তারা পছন্দ করে নিরাপদ, সম্মানজনক পেশায় যাওয়া। যেমন কর্পোরেট, আইটি, অ্যাকাডেমিক বা উদ্যোক্তা খাতে। যার ফলে রাজনীতিতে তাদের অংশগ্রহণ কম।
তৃতীয়ত, আমাদের দেশে রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্র রাজনীতিকে অনেকটা রিক্রুটমেন্ট প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করে। এবং তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপরই বেশি ফোকাস করে। কেননা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পারিবারিক চাপ তুলনামূলকভাবে কম, তারা রাজনৈতিক কাজে যুক্ত হতে অপেক্ষাকৃত স্বাধীন।
প্রধান এই তিনটি কারণেই আপনি সংসদে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম দেখবেন। তবে সময় বদলাচ্ছে। এখনকার তরুণরা অনেক বেশি সচেতন, প্রযুক্তিসম্পৃক্ত এবং নেতৃত্বদানের মানসিকতাসম্পন্ন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে আমরা আরও বেশি করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উঠে আসা তরুণদের রাজনীতিতে, এমনকি সংসদেও দেখতে পাব।
বর্তমানে পিআর সিস্টেম নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছে। আমরা এটাও দেখছি যে পিআর সিস্টেম নিয়ে এনসিপি, জামায়াতে ইসলামী, গণঅধিকার পরিষদ, চরমোনাই ইত্যাদি রাজনৈতিক দলের একই বক্তব্য দিচ্ছে। এনডিএম-এর চেয়ারম্যান হিসেবে আপনার বার্তা কী?
আমাদের বার্তা স্পষ্ট—আমরা যখন নতুন গণতান্ত্রিক যাত্রা শুরু করেছি, তখন কিছু দলের আত্মকেন্দ্রিক স্বার্থের জন্য এই প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা উচিত নয়। পিআর সিস্টেম নিয়ে আলোচনায় যাওয়ার আগে এর প্রকৃত রূপটি বোঝা দরকার। বাংলাদেশে এনডিএম-ই প্রথম দল হিসেবে অফিসিয়ালি পিআর সিস্টেম চালুর দাবি তোলে। তবে আমরা বলেছি, এটা হতে হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদে—এক কক্ষে পিআর, আরেক কক্ষে এফপিটিপি। এতে রাজনৈতিক ভারসাম্য রাখা সম্ভব। কিন্তু বর্তমানে যেসব দল সম্পূর্ণ পিআর চাইছে, তাদের উদ্দেশ্য গণতন্ত্র নয়, বরং দলীয় স্বার্থ। কারণ তারা বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগির আলোচনায় প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি, এটা তো ওপেন সিক্রেট।
মার ধারণা, তারা এটা একটি নেগোসিয়েশনের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু এই কৌশল ক্ষতিকর, কারণ সম্পূর্ণ পিআর ব্যবস্থা গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। পিআর মানে আপনি ব্যক্তিকে ভোট দেবেন না, দেবেন দলকে। এতে ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা উঠে যায়, জবাবদিহিতাহীন রাজনীতি জন্ম নেয়। আপনার এলাকায় কে সাংসদ তা আপনি জানবেন না, কারণ পিআর সিস্টেমে আসনভিত্তিক প্রতিনিধি থাকে না। বাংলাদেশের মতো বাস্তবতায়, এটি দলতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে, গণতন্ত্র নয়। আমরা এই বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত দেখেছি আগের সরকারের আমলে—যেখানে সংসদ সদস্যদের কোনো ক্ষমতা ছিল না, সবকিছু কেন্দ্রীভূত ছিল দলপ্রধানের হাতে। এতে স্থানীয় পর্যায়ে কোনো জবাবদিহিতা থাকে না। আরেকটি বাস্তব প্রশ্ন—গত কয়েকটি নির্বাচনে কেউই ৫০ শতাংশ ভোট পায়নি। এমনকি ৯১, ৯৬ বা ২০০১ সালে কেউ ৪০ শতাংশের বেশি ভোট পায়নি। তাহলে শুধুমাত্র দলীয় ভোটে কোনো দল এককভাবে সরকার গঠনই করতে পারবে না। সরকার গঠনই যদি না হয়, তাহলে দেশ চলবে কীভাবে?
এই দলগুলো বিষয়টি বোঝে। তারা জানে পূর্ণ পিআর বাস্তবসম্মত নয়। তবু তারা সেটার পেছনে ছুটছে শুধু তাদের ব্যর্থ জোট আলোচনা থেকে ক্ষোভ প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে। আমাদের দীর্ঘ ১০–১৫ বছরের যে সংগ্রাম, আন্দোলন, ত্যাগ—তার প্রেক্ষিতে গণতন্ত্রের এই নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। সেই অর্জনকে ছোট করে দেখানোর এই অপচেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক।
আপনি সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির বিভিন্ন সেমিনারে বক্তব্য দিয়ে তরুণদের উজ্জীবিত করছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরে গিয়ে, একজন মানুষ এবং দেশপ্রেমিক হিসেবে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
এখানে দুইভাবে দেখার বিষয় আছে। আপনি বলছেন, রাজনীতির বাইরের সম্পর্ক। গত কয়েক বছরে তারেক রহমানের সাথে আমার যে সম্পর্ক, পুরোটাই রাজনৈতিক সম্পর্ক। উনার নেতৃত্বেই আমরা একত্রিতভাবে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছিলাম যেটাকে পরবর্তীতে আমরা এক দফা নাম দিই। এরপর থেকে আমরা একত্রিত আছি, কীভাবে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়বে। তাই, সেই জায়গা থেকে পরিচয়ের ভিত্তিটাই হলো রাজনীতি। আমাদের অনেক আলোচনা হয়, তবে প্রত্যেকটা আলোচনা রাজনীতির ভিত্তিতেই হয়। তবে গত কয়েক বছরে আমার সৌভাগ্য হয়েছে উনার সাথে অনেক আলোচনা করার, সেখান থেকে ব্যক্তিগতভাবে যদি আমি বলতে চাই, আমি দুটো জিনিসই বলব। আমার কাছে তারেক রহমান একজন সজ্জন ব্যক্তি, খুবই ওপেন মাইন্ডেড একটা মানুষ যিনি আসলেই বাংলাদেশকে ভালো কিছু দিতে চান, তারজন্য উনি নিজে কি চিন্তা করেন শুধু সেটা না, উনি সবার কাছ থেকে শুনতে চান, জানতে চান। আমার কাছে মনে হয় একজন লিডারের এটা অত্যন্ত মহৎ একটি গুণ।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিম্নমুখী এটা আমরা অবগত আছি। শিক্ষা ব্যবস্থায় আসলে সমস্যাটা কোথায় হয়েছিল? আর সমাধানটা কী সামনে?
সমস্যা তো আমরা অনেক জায়গায় অনেকভাবে আখ্যায়িত করতে পারি। তবে আমি সমাধানের দিকে যাই। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অবস্থা খুবই খারাপ। এটা সমাধানের জন্য বা উন্নয়নের জন্য একটা-দুটো জিনিসের দিকে তাকালে হবে না। আমাদের ঢালাওভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাজাতে হবে। এবং এটা লোকাল প্রয়োজনীয়তা ভালোভাবে বুঝে সাজাতে হবে। গত সরকারের আমলে আমরা দেখেছি স্ক্যান্ডিনেভিয়ান স্টাইলে সাজাতে চায় শিক্ষা ব্যবস্থাকে। আমরা স্ক্যান্ডিনেভিয়ান না। লোকাল রিয়ালিটি অগ্রাহ্য করে আপনি যদি কিছু সাজাতে চেষ্টা করেন, সেটা কখনোই ভালো হতে পারে না। ওই জায়গা থেকে আমাদের লোকাল রিয়ালিটি বুঝে প্রাইমারি থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা সব লেভেলের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাজাতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের গত ১ বছরের পারফরম্যান্স আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
নম্বর দেওয়া খুব মুশকিল। আপনার সাথেই আলোচনা হয়েছিল যে আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক বেশি ছিল। আক্ষরিক অর্থেই বেশি ছিল যেটা তারা পারার কথা না। এর থেকে আরও বেটার হওয়া উচিত ছিল। যেমন: তরুণ উপদেষ্টাদের নিয়ে আমি ইতোমধ্যে আপনার সাথে আলোচনা করেছি। এমনও ঘটনা ঘটছে যে তরুণ উপদেষ্টারা যে দলটা বানিয়েছেন, এনসপি, সরকারের পক্ষ থেকে এনসিপিকে বাহবা জানানো হচ্ছে। এই জিনিসগুলো সাধুবাদ জানানোর জিনিস না। এদিকে আবার সরকারের ভেতর থেকে নির্বাচনকে বিলম্বিত করার প্রচেষ্টা আমরা দেখছি। উপদেষ্টার থেকে না এটা, সরকারের ভেতর বাকি আরও অনেকে আছে যারা এই অপচেষ্টা করছেন। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য এখনও এই সরকার কিছুই করেন নাই। অনেক কিছুই করতে পারেন নাই। সেটা তাদের দোষ না, হয়ত পারতেনও না। আবার অনেক জিনিস পারতেন, কিন্তু করেন নাই। আইন শৃঙ্খলা বা সামাজিক অবস্থা, আবার একটু স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গায় নিয়ে আসা, এটা অনেক কিছু পারেননি, অনেক কিছু করেননি। এভাবে অনেক তাদের দুর্বলতা আছে। আবার সব সরকারেরই দুর্বলতা থাকে। সে জায়গা থেকে কিছু বিষয় অবশ্যই ক্ষমার যোগ্য। তবে নির্বাচন প্রলম্বিত করলে এ ধরনের সমস্যাগুলো আরও ঘনীভূত হবে। তখন কিন্ত আমরা এই ব্যাপারগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবো না। তাই আপাতত আমি বলছি, যতদূর গেছে ঠিকঠাক গেছে, সামনে তাড়াতাড়ি নির্বাচন না হলে তাদের রেটিং আসলেই অবনতি ঘটবে।
সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে দলটির চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ এসব জানান।
সংসদীয় আসন পুনবিন্যাস, নির্বাচনী আচরণবিধি, প্রার্থীর অযোগ্যতাসহ ৪ দাবিতে কমিশন লিখিত প্রস্তাব জানিয়েছে দলটির নেতারা। এসময় দলটির পক্ষ থেকে নির্বাচনী আচরণবিধিতে ব্যয়সীমা ২৫ লাখ থেকে ৪০ লাখে উন্নীত করণের দাবি জানানো হয়।
ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘আমরা চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। এক্ষেত্রে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ চেয়েছি। নির্বাচনী ব্যয়সীমা ২৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ লাখ টাকায় উত্তীর্ণ করতে বলেছি। এছাড়া পিভিসি পোস্টার বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বলেছি। নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে এমন দলের নেতারা যেন ভোটে দাঁড়াতে না পারে ইসি যেন সেই ব্যবস্থা নেয়, সে কথাও বলেছি।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন ২৫ লাখ টাকা ব্যয়সীমা করা হয়েছিল, সেই সময়ের বাজারদর আর এখন নেই। সবকিছুর দাম বেড়েছে। তারপরও পোস্টার তুলে দিতে চাইছে। তাই ব্যয়সীমা বাড়িয়ে ৪০ লাখ টাকার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া বিলবোর্ডের কথা বলা হয়েছে প্রচারের জন্য। বিলবোর্ড ভাড়া করতে হলে ৪০ লাখ টাকার মধ্যেও ব্যয় সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব নয়।
একইদিন বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি আনারস প্রতীকসহ নিবন্ধনের দাবি জানিয়ে ৫৩ বছরের মধ্যে সেরা নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানান।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের সব কমিটির নেতাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা দাবি জানিয়েছেন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম)।
সোমবার (০৭ জুলাই) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএ নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে এ দাবি জানিয়েছে দলটি।
এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের নির্বাহী আদেশে যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা বা নিবন্ধন স্থগিত থাকা রাজনৈতিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় বা জেলা বা উপজেলা পর্যায়ের কমিটির সদস্য এবং অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির কোনো সদস্যকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
তিনি বলেন, নিবন্ধন স্থগিত বলতে আমরা আওয়ামী লীগকেই বুঝিয়েছি। আইন যেহেতু হয়েছে, সে আইনের স্পিরিট মানতে হবে। তাই ইসি যেন তাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা ব্যবস্থা খুঁজে বের করে।
তিনি বলেন, বৈঠকে আমরা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যক্তিগত ঋণের জামিনদারদের ক্ষেত্রে ঋণের মূল আবেদনকারী খেলাপি হলে মনোনয়নপত্র দাখিলের পূর্বে ঋণ পরিশোধ স্লিপ প্রদান সাপেক্ষে প্রার্থীকে নির্বাচনের যোগ্য বিবেচিত করার কথা বলেছি।
ববি হাজ্জাজ আরও বলেন, বিদ্যমান আইনের ৭ ধারা অনুযায়ী সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সুতরাং আগামী ৬০ দিনের মধ্যে এসংক্রান্ত আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে। আসন পুনর্বিন্যাসের ক্ষেত্রে জেলার মোট আসন অপরিবর্তিত রাখতে হবে। এক জেলায় অবস্থিত সংসদীয় আসন অন্য জেলায় স্থানান্তর করা যাবে না, যেখানে সম্ভব উপজেলাকে অবিভাজিত রাখতে হবে।
আসন পুনর্বিন্যাসের ক্ষেত্রে জনসংখ্যা, বিভিন্ন আসনের মধ্যে ভোটার সংখ্যার তারতম্য, ভৌগলিক সীমারেখা এবং যাতায়ত ব্যবস্থা, জনপ্রত্যাশা ইত্যাদি বিষয়কে প্রাধান্য দিতে হবে।
নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে এনডিএম চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনায় সংসদীয় আসনের নির্দিষ্ট স্থানে প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থীর ছবি সংবলিত বিলবোর্ড স্থাপন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনায় প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থীর উপস্থিতিতে জনবহুল স্থানে অন্তত একটি পরিচিতি সভার আয়োজন করতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রার্থীর সঙ্গে ১০ জন সমর্থককে যাওয়ার অনুমতি দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভোটের প্রচারে প্রস্তাবিত পিভিসি ব্যানার ব্যবহার না করা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কোনো প্রার্থীর ব্যক্তিগত চরিত্র হনন এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে কোনো প্রচারণা চালাতে পারবে না বলে আচরণবিধিতে উল্লেখ করতে হবে। নির্বাচনী ব্যয়সীমা ৪০ লাখ টাকায় উন্নীত করতে হবে।
ববি হাজ্জাজ বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ধরে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সংলাপ আয়োজন করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় নির্বাচনের তফসিল এবং তারিখ ঘোষণা সংক্রান্ত আলোচনা হয়ে থাকলে তা দ্রুত জাতিকে জানাতে হবে।
আগামী ৬০ দিনের মধ্যে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ চান ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।
সোমবার (০৭ জুলাই) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন দাবির কথা জানান।
ববি হাজ্জাজ বলেন, আমরা চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ চেয়েছি। নির্বাচনী ব্যয়সীমা ২৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ লাখ টাকায় উত্তীর্ণ করতে বলেছি। পিভিসি পোস্টার বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। এ ছাড়া নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে, এমন দলের নেতারা যেন ভোটে দাঁড়াতে না পারেন, ইসি যেন সেই ব্যবস্থা নেয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন ২৫ লাখ টাকা ব্যয়সীমা করা হয়েছিল, সেই বাজারদর আর এখন নেই। সবকিছুর দাম বেড়েছে। তার ওপর পোস্টার তুলে দিতে চাচ্ছে। তাই ব্যয়সীমা বাড়িয়ে ৪০ লাখ টাকার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া বিলবোর্ডের কথা বলেছে প্রচারের জন্য। বিলবোর্ড ভাড়া করতে হলে ৪০ লাখ টাকার মধ্যেও ব্যয় সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব নয়।
নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে এমন দলের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, নিবন্ধন স্থগিত থাকা দলের কোনো সদস্যের ভোটে দাঁড়ানোর বিষয়টা যেন অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। নাম লুকিয়ে যেন সেই দলের কোনো নেতা ভোটে না আসতে পারে, তার ব্যবস্থা করার কথা বলেছি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ববি হাজ্জাজ বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন যখন বলছি তখন আওয়ামী লীগের কথা বলছি। কেন্দ্র, জেলা বা উপজেলা কমিটিতেও যারা পদে ছিলেন, এমন নেতাদের কথা আমরা বলেছি, যেন তাদের ভোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ না দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ না। যখন আইন পাস হয়, তখন সেটার স্পিরিট মানতে হবে। নিবন্ধন স্থগিতাদেশ যদি না ওঠে তাহলে তারা ভোটে অংশ নিতে পারবে না।
এনডিএম প্রধান বলেন, ভোটের পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়ে বলেছি, ফেব্রুয়ারিকে ধরে যেন ইসি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ আয়োজন করে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারিখ নিয়ে আলোচনা হলে তা জানানো। তবে সিইসি বলেছেন, কোনো নির্দেশনা সরকারের তরফ থেকে আসেনি। তারা জুনের মধ্যে ভোটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তিনি বলেন, কখন নির্বাচন হবে তা যদি সিইসি পরিষ্কার করে জানান তবে জনগণের ধারণা পরিষ্কার হবে।
ইইউডি/এমজেএফ
❝২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান❞-এ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দ্বারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার উপর চালানো গণহত্যায় আহত, নিহত এবং তাঁদের পরিবারবর্গের জন্য এক বিশেষ দোয়া মাহফিল করেছে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাজধানীর মালিবাগ মোড়ে দলের মহানগর কার্যালয়-এ দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন এনডিএম উচ্চ পরিষদের সদস্য হুমায়ূন পারভেজ খান এবং সঞ্চালনা করেন ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েল। মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন, দলের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, দপ্তর সম্পাদক জাবেদুর রহমান জনি, নির্বাহী সদস্য নুর উল্লাহ, যুব আন্দোলনের সভাপতি আদনান সানিসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
উচ্চ পরিষদ সদস্য হুমায়ূন পারভেজ খান বলেন, ‘আমরা এই দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি তাঁদের, যাঁরা স্বৈরাচারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। জুলাই- আগস্টে যেসব নিরীহ নাগরিক স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের গুন্ডাবাহিনী ও পুলিশবাহিনী দ্বারা সহিংসতার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বা আহত হয়েছেন, তাঁদের আত্মত্যাগ জাতি কখনো ভুলবে না। আমরা তাঁদের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁদের পরিবারবর্গের জন্য ধৈর্য ও শান্তি কামনা করি। পাশাপাশি, আমরা জোরালোভাবে দাবি জানাচ্ছি’।
তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নৃশংসতা এবং ছাত্র-জনতা হত্যাকান্ডে জড়িত সকলের দ্রুত ও নিরপেক্ষ বিচার হোক এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার সকল দোসর ও পৃষ্ঠপোষকদের আইনের আওতায় আনা হোক। এনডিএম বিশ্বাস করে, বিচারহীনতার অবসান ঘটিয়ে শান্তি, ন্যায়বিচার ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই হবে শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা’।
মাহফিলে দোয়া পরিচালনা করেন ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মুফতি শেখ মুহাম্মদ ফরিদ।
ববি হাজ্জাজ "বাংলাদেশ জনতান্ত্রিক পার্টি" (বিজেপি) নামে একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সম্প্রতি তাকে রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে প্রশ্ন করা হয় যেখানে তিনি বলেন, 'আপনি যত বড় কাজ করতে চান কাজটি তত কঠিন। আপনি যদি গুগল খুলতে চান আপনার সেটা আপনার জন্য তত কঠিন ,যতটা সহজ আপনার জন্য একটা ছোটখাটো ব্যবসা দাড়ঁ করানো।
তিনি আরো বলেন, পলিটিকাল পার্টি করার জন্য প্রাথমিক ধাপটাই অনেক বড়। যেহেতু রাজনীতিতে সবকিছু ভোটের মাধ্যমে তৈরি হয়। যেহেতু নির্বাচন ছাড়া রাজনীতি নয়। সবচেয়ে ছোট নির্বাচনই হচ্ছে ওয়ার্ড নির্বাচন যেখানেও ১ লক্ষ মানুষ ভোট দেয়। সুতরাং রাজনীতি কোনো ছোট বা সহজ বিষয় নয়।'
আমাদের দেশে রাজনীতির জন্য যেকোনো ধরনের সহিংসতাও করা হয়। আমার ১০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে মার খাওয়া থেকে শুরু করে এমন কোনো সহিংসতা নেই যার মুখোমুখি আমি হইনি। সরাসরি থ্রেট থেকে শুরু করে উঠিয়ে নিয়ে হুমকি দেওয়া সবকিছু করা হয়েছে আমার সাথে।
এমনটাও বলা হয়েছে যে আমরা চাইনা যে ভাবী এতো তারাতাড়ি বিধবা হোক। অর্থাৎ একটা রাজনৈতিক দল গঠন করা এতো সহজ নয়। এটি একটি জটিল এবং সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুলী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলামকে পিতার কুলখানি অনুষ্ঠান থেকে যৌথবাহিনী কর্তৃক আটকের পর নির্যাতনের চিহ্নসহ একদিনের মাথায় মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ববি হাজ্জাজ বলেন, “জয়পুরহাটে মেয়েদের ফুটবল খেলাকে বাঁধা দেবার মত দুঃখজনক ঘটেছে। রাস্তায় নেমে ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির জন্য আন্দোলন করতে হয়েছে। দ্রব্যমূল্যেরে ঊর্ধ্বগতি এবং বিনিয়োগে মন্থর গতি। আমরা যখন মৌলিক সমস্যাগুলো সমাধানে ব্যস্ত ঠিক তখন এক ভয়াবহ ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। যৌথবাহিনী কোন কারণ দর্শানো ছাড়াই যুবদলের এক নেতাকে ধরে নিয়ে একরাতের মধ্যে নির্যাতন করে যেভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিলো এতে আমরা স্তম্ভিত। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলের মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি নতুন বাংলাদেশে কেন ঘটবে?”
ববি হাজ্জাজ বলেন, “হাসিনা আমলে ধারাবাহিকভাবে বিরোধী মত এবং পথের লোকজন নির্যাতিত হয়েছে। গুম-ঘুনের ঘটনা ছিলো নিত্যঘটনা। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা সেটা জানতে চাই। প্রশাসনের ভিতর এখনো আওয়ামী ভূত ঘাপটি মেরে আছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার কালক্ষেপণ করছে বলেই এই ঘটনা ঘটেছে। দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।”
ববি হাজ্জাজ বলেন, “আমরা উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু করেছি। শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিনোদন, ধর্মীয় বিশ্বাস নির্বিশেষে আমরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণ করতে চাই। ক্রীড়া ক্ষেত্রে মেয়েদের সুযোগ নিশ্চিত করতে চাই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানকে উন্নত করতে চাই এবং যেসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বিশ্ববিদ্যালয় মানে উন্নত করা সম্ভব সেটার বাস্তবায়ন দেখতে চাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন জনগণের সাথে ঔপনিবেশিক শাসনামলের মত আচরণ না করে আমরা সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে আওয়ামী লীগকে সরকারিভাবে টেরোরিস্ট (জঙ্গি) ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
ববি হাজ্জাজ বলেন, আজকের বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। জাতীয় নির্বাচন কখন, কীভাবে হবে তা তুলে ধরেছি। তবে, তার আগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা দেখতে চাই বলে জানিয়েছি।
এনডিএম চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ দেশে গণহত্যা চালিয়েছে। তারা গত সবকটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করেছে। বিশেষ করে তারা গত জুলাই-আগস্টে নজিরবিহীন গণহত্যা চালিয়েছে। তাই দলটি এখন দেশের মানুষের কাছে টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তাই আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছি যেন সরকারিভাবে আওয়ামী লীগকে টেরোরিস্ট ঘোষণা করা হয়, সেইসঙ্গে তাদের রাজনীতি যেন নিষিদ্ধ করা হয়।
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা শক্তভাবে জানিয়েছি জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই স্থানীয় নির্বাচন নয়। আমরা মনে করি, স্থানীয় নির্বাচনকে ঘিরে প্রচুর দাঙ্গা-কোন্দল শুরু হতে পারে। পুলিশ বাহিনী এখনই আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না, তখনও পারবে না। তাই জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই যেন স্থানীয় নির্বাচন না হয়, সে কথা আমরা বলেছি।
ববি হাজ্জাজ আরও বলেন, নির্বাচিত সরকারের বাইরে বড় কোনো সংস্কার সম্ভব নয়। তাই, শিগগিরই একটা নির্বাচন দরকার। আমরা বলেছি, ২০২৫ সালেই নির্বাচন দিতে হবে এমন নয়, তবে অতি শিগগিরই যেন দেওয়া হয়। এর আগে প্রতিটি সংস্কার কমিশন যেন প্রতিটি দলের সঙ্গে বসে এবং সংস্কার নিয়ে আলোচনা করে। সংস্কার নিয়ে যদি ঐক্যমতে না আসা যায়, তাহলে সেই সংস্কার রাজনৈতিক সরকার করবে।
BNP Acting Chairman Tarique Rahman on Tuesday urged political parties to present proposals to the nation to address public issues, rather than focusing only on reforms to the state structure and institutions.
"Instead of merely discussing the caretaker government system, the constitutional framework, and the voting and electoral system, there should be more emphasis on how the problems of people will be resolved," he said during an iftar programme.
The Nationalist Democratic Movement (NDM) organised the iftar party in honour of political parties at the Bangladesh Shooting Sport Federation Convention Hall in the capital.
Tarique believes that, just as there should be discussions and proposals regarding the control of prices for essential goods, the market system, and the production system, there should also be debates among political parties on how to ensure primary healthcare for the people in this populous nation of approximately 200 million. "Why aren’t we talking about these issues?"
He also said whether formulating laws and regulations to restore the caretaker government and limiting any individual to two terms as Prime Minister are considered reforms. "Isn’t reform necessary to change the market system, boost production and improve the healthcare and education systems?"
As political parties are meant to serve people, the BNP leader said they should also focus on many other critical issues related to the public's interests.
"For example, most people in the country are suffering severely due to the rising prices of essential items. Why are political parties not engaging in discussions on how we will address this issue?" he asked.
Tarique said political parties should present plans and proposals to the nation on how they will keep commodity prices within the purchasing power of the common people by overhauling the market system and boosting production. "Why don’t we discuss these issues? We should address them before the nation.”
He acknowledged that different democratic political parties have varying political ideologies, but their common goal is the restoration of democracy and the creation of a humane Bangladesh where people will enjoy freedom of expression.
The BNP leader said his party, along with many other democratic parties, had led movements to restore the rights taken away from people. "We succeeded in this endeavour. But, reform is now the most discussed issue, as much is being said about it.”
Tarique acquitted by Jashore court in sedition case filed in 2014
Tarique recalled that the political parties, including the BNP, had drafted a 31-point reform outline and presented it to the nation. "We did this around two-and-a-half years ago, when many others were not talking about reforms," he said.
He said they welcome various opinions and proposals regarding state reform, as they are open to discussing issues related to the welfare of the country and its people. "The discussions currently taking place about reforms are certainly necessary.”
The BNP leader said discussions are now taking place on the pros and cons of introducing a bicameral parliament, limiting an individual's terms to become Prime Minister, ensuring a balance of power between the President and the Prime Minister, and restoring the caretaker government. "We have said we will implement these changes in line with people’s desires if we form the government with their support.
“Let us think about the problems of people and talk about them. Let us try to highlight what reforms we have in this regard as well,” he said.
Tarique acknowledged that political parties will inevitably criticise each other realistically.
“But, we must avoid creating a situation where, in our criticism of each other, we forget to address the issues facing our people and the country, allowing insignificant matters to become more important. If this happens, the potential of this country will be ruined,” he warned.
He said that reform is also essential for overhauling the country’s education system. “If we fail to establish a proper education system for future generations, how can we possibly move this country forward? How can we build a prosperous nation?”
The BNP leader said each party should inform the public about their plans and proposals for reforming the education system. “We advocate for a production-oriented education system, but perhaps we should provide more details on what that entails."
Tarique also said it is urgent for political parties to present reform proposals to combat environmental pollution as the country is facing severe environmental threats.
"I believe reform proposals on the environment are crucial at this moment. Due to noise pollution, air pollution, and other forms of pollution, millions of people, including children, are becoming physically ill every year. Our plan to protect the entire country, including the capital, from this pollution should be presented by all political parties to the nation,” he said.
The BNP acting chairman said political parties should also address necessary reforms related to issues such as creating an environment conducive to industrialisation, providing safe drinking water and tackling the power and energy crisis.
NDM Chairman Bobby Hajjaj, Tarique Rahman’s political adviser Mahdi Amin, AB Party Chairman Mujibur Rahman Manju, and Nagarik Oikkya leader Shahidullah Kaiser, among others, addressed the programme.
There are rivers, and then there are currents. The rivers of Bangladesh—Padma, Meghna, Jamuna—run deep, shaping land, destiny and commerce. But currents, the unseen forces that dictate the flow of history, are harder to chart.
The tides of geopolitics, the undercurrents of trade wars, the ripples of power shifts—all dictate the future of nations. In this interplay, Bangladesh and China are not merely drifting neighbours; they are architects of a shared destiny, bound by history, ambition and a blueprint for the future.
Recent events have added urgency to this discourse. A 21-member delegation, of which I was a part, embarked on a journey to Beijing, not as idle emissaries but as active negotiators of Bangladesh's place in the unfolding Asian century. In meetings with high-ranking officials of the Chinese Communist Party (CPC) and the foreign ministry, we presented a vision for an elevated partnership. The response? Enthusiastic endorsement.
What followed was not mere diplomatic pleasantries but a recognition: Bangladesh is ready to be more than a recipient of Chinese investments; it is ready to be a strategic collaborator, a manufacturing force, and a regional stabiliser.
Bengal's entanglement with China predates modern geopolitics. In the fourth century, Fa-hsien chronicled the culture of the Gangetic delta, and in the seventh century, Hiuen Tsang met King Harshavardhana, bearing testimony to ancient ties of scholarship and trade. Fifteenth century navigator Ma Huan, who sailed under Admiral Zheng He, described Bengal's bustling ports, its Muslim rulers, and the mercantile energy that linked it to the Chinese court.
In matters of spirit, even the revered Shah Jalal of Sylhet found a place in Chinese records, further cementing centuries-old exchanges.
These were not just transactions; they were threads in a grander fabric, one that today unfolds in the shape of economic corridors, industrial parks, and transcontinental supply chains.
As China ascends to the heights of artificial intelligence and high-tech industries, it leaves behind a vacancy—a space for manufacturing to migrate. Vietnam has seized the opportunity. So has Indonesia. Why not Bangladesh?
DeepSeek, China's latest foray into AI, signals a shift, one where China will export not just goods but knowledge while relocating its traditional industries elsewhere. Bangladesh, with its labour force, its strategic location, and its deepening ties through the Belt and Road Initiative (BRI), must make the case for itself. The investments that were put on hold due to political uncertainties must be rekindled, and Bangladesh should position itself as the next re-export hub for Chinese goods, optimising trade routes, reducing costs, and sustaining China's access to global markets.
Of all the shadows looming over Bangladesh, none is darker than the crisis in Myanmar. The Rohingya crisis is not just a humanitarian catastrophe; it is a geopolitical fault line. Without stability in Myanmar, Bangladesh's security remains fragile.
China's influence in Naypyidaw is undeniable. Yet, for too long, Bangladesh has been a passive observer, waiting for Beijing to pressure the Myanmar junta into action. The delegation pressed the case: China must do more. The repatriation of the Rohingya, the stabilisation of Rakhine state, and the assurance that Myanmar does not descend into prolonged chaos are matters that Beijing cannot afford to ignore. The response? A willingness to engage, to mediate, and to ensure that the next Bangladesh government finds a stable eastern frontier.
The world is in flux. The US, China and India form a triad of competing interests in South Asia. Bangladesh's geography has placed it at the crossroads of this rivalry, but geography is not destiny—policy is. Rather than picking sides, Bangladesh can be a bridge between these global powers, leveraging its historical closeness with India, its growing ties with China, and its strategic importance to the US.
This is not about neutrality but about active diplomacy—playing the role of mediator, connector, and stabiliser in an increasingly multipolar world.
The meetings in China were not just about rhetoric. They were about plans, commitments, and structured collaboration. The 11-point charter, adopted by the delegation and welcomed by the CPC, outlines the next steps: strategic alignment for regional stability; positioning Bangladesh in global trade shifts; strengthening logistics and trade routes; advancing technological partnerships; expanding trade and cultural exchange; building a sustainable industrial base; expanding military manufacturing ties; leveraging China's diplomatic influence for Rohingya repatriation; Teesta River water management; accelerating investment in transport and communications; and developing banking and financial collaboration.
The enthusiasm from China's leadership was not just symbolic. These initiatives are actionable, transformative, and most importantly, mutually beneficial.
The rivers in Bangladesh will always flow towards the sea, but the currents of history can be steered. The Bangladesh-China relations have entered a new era, one where Bangladesh is not just a recipient of investment but a co-creator of the future. The foundation has been laid; the agreements have been acknowledged. The challenge, now, is execution. Will Bangladesh rise to claim its place as a hub of manufacturing, defence co-production, and geopolitical mediation? Or will it allow others to dictate the terms of engagement? The moment demands action, vision, and leadership.
The tide is rising. Bangladesh must set sail.
শুক্রবার (২১ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে এনডিএম এর অবস্থান নিয়ে এসব কথা জানায় দলটি৷
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুথানে পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিদায়ের পর এ দেশে এক নবদিগন্তের সূচনা হয়েছিলো৷ ২০১৭ সালের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দল হিসাবে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজপথে সোচ্চার থেকেছে৷ বিএনপির নেতৃত্বে হাসিনা পতনের একদফা দাবি আদায়ে যুগপৎ আন্দোলন করেছে এনডিএম। জুলাই গণঅভ্যুথানেও আমরা রাজপথে রক্ত ঝড়িয়েছি।
এতে বলা হয়, ৫ আগস্ট হাসিনার পতনের পর নতুনভাবে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধে দল হিসাবে আওয়ামী লীগের বিচার চেয়ে অভিযোগ দায়ের করে এনডিএম৷ একইসঙ্গে আমরা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের বিচারও চেয়েছি৷ দু:খজনক হলেও সত্য, নতুন খসড়া আইনে এই ট্রাইবুনাল কর্তৃক সংগঠনের বিচার করার এখতিয়ার দেওয়া হয়নি।
তবে আমাদের লড়াই থেমে যায়নি। আমাদের কথা পরিষ্কার, বাংলাদেশের পবিত্র জমিনে অগনিত ছাত্র-জনতা, রাজনৈতিক কর্মী, আলেম-ওলামা, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিকদের রক্ত ঝড়ানো আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে না৷ আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার যে কোনও প্রকল্প আমরা রক্তের বিনিময়ে রুখে দেব, ইনশাআল্লাহ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নির্বাচন এবং রাজনীতি থেকে আওয়ামী লীগকে দূরে রাখতে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে৷ জনগণ এই ফ্যাসিবাদী শক্তিকে আর দেখতে চায় না।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে যে কোনও আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে থাকবে এনডিএম। এখানে কোনও যদি-কেন-কিন্তু নেই৷ সরকারের ভেতরে বা বাইরে যারাই আওয়ামী লীগকে পুর্নবাসন করতে চাইবে তাদেরকেই জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে হিসাব দিতে হবে।
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)-এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেছেন, বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের আজকের এই লক্ষ লক্ষ মানুষের মিছিলের বার্তা হচ্ছে, বিশ্বের মুসলমানদের অধিকারের ব্যাপারে বাংলাদেশের তরুণরা যেমন সোচ্চার, ঠিক তেমনি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্রের ব্যাপারে যদি কোন প্রশ্ন উঠে সেখানেও তারা সোচ্চার থাকবেন। বাংলাদেশের তরুণরা সবসময় সোচ্চার ছিলেন, আছেন এবং সামনেও থাকবেন।
আজ ১২ই এপ্রিল (শনিবার) ‘মার্চ ফর গাজা’ অনুষ্ঠানের একটি মিছিলে এসব কথা বলেন তিনি।
গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে এবং নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাতে আজ রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘মার্চ ফর গাজা’ নামক এক ব্যতিক্রমধর্মী গণজমায়েত। বিকেল ৩টায় মূল অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই জনস্রোত ভিড় জমাতে শুরু করে উদ্যানে ও তার আশপাশের এলাকায়।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রতিটি প্রবেশদ্বারে দেখা গেছে মানুষের দীর্ঘ লাইন। একের পর এক মিছিল আসছে নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। হাজারো মানুষের কণ্ঠে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। মিছিল থেকে ভেসে আসছে প্রতিবাদের গর্জন। অংশগ্রহণকারীদের অনেকের হাতেই রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও ফিলিস্তিনের পতাকা।
‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে – ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান বর্বরোচিত ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বজনমত গঠন, মানবিক সহানুভূতি জাগ্রত করা, এবং নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করা।
বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয়ে কর্মসূচি চলবে মাগরিবের নামাজের পূর্ব পর্যন্ত। আয়োজকরা জানিয়েছেন, এটি কোনো রাজনৈতিক বা দলীয় অনুষ্ঠান নয়; বরং মানবিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের পক্ষে একটি সর্বজনীন অবস্থান।
উদ্যানের পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর হলেও হৃদয়ে ছিল শোক ও প্রতিবাদের তীব্র সুর। বক্তব্য, ব্যানার, পোস্টার ও শ্লোগানে একটাই বার্তা – “গাজায় গণহত্যা বন্ধ করো”, “মানবতা বাঁচাও” এবং “নিপীড়িতের পাশে দাঁড়াও”।
ঢাকা: জুলাই গণঅভ্যুথানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্র সংষ্কারের আকাঙ্খা এবং উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেছেন, “আমরা ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্ববর্তীকালীণ সরকারকে রাষ্ট্র সংষ্কারের মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে আমরা মনে করি, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানের মাধ্যমে গঠিত হওয়া এই সরকারের দায়িত্ব ছিলো টেকসই ভবিষ্যত বিনির্মাণের জন্য ফ্যাসিবাদী সংগঠন হিসাবে আওয়ামী লীগের বিচার করা। কারণ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাই সর্বপ্রথম সংষ্কার।”
ববি হাজ্জাজ বলেন, “সাবেক কোন প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের অযোগ্যতা একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে আমরা এই প্রস্তাবের সাথে একমত হতে পারি নাই। প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই টার্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়েও আমরা পুরোপুরি একমত নই। জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের ব্যাপারে আমরা একমত হলেও আমরা মনে করি একমাত্র নির্বাচিত সংসদই এই সিদ্ধান্ত নেবার এখতিয়ার রাখে। তবে সংবিধান সংষ্কার কমিশনের প্রতিবেদনে সুপারিশকৃত এনসিসির গঠন প্রক্রিয়ার সাথে আমরা সম্পূর্ণভাবে একমত নই এবং প্রয়োজনে এনসিসির সকল সদস্যের সম্মতিতে রাষ্ট্রপতি প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণ করতে পারেন বলে যে বিধান রাখা হয়েছে তার সাথে আমরা দ্বিমত পোষণ করেছি।”
তিনি বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করার যে সুপারিশ নির্বাচন কমিশ সংষ্কার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আমরা তা প্রত্যাখান করেছি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিকে মনোনীত করার বিষয়ে আমরা একমত নই। সংবিধানে বহুত্ববাদ সংযোজন নিয়েও আমাদের আপত্তি রয়েছে। রাষ্ট্রের মূলনীতি পরিবর্তনের সুপারিশ যেভাবে করা হয়েছে সেখানে জাতীয়তাবাদ প্রশ্নে আমাদের ভিন্নমত রয়েছে। সংবিধানে মৌলিক অধিকার প্রশ্নে ভারসাম্য এবং আনুপাতিকতা পরীক্ষার যে কথা বলা হয়েছে তা বাস্তবসম্মত নয়।”
ববি হাজ্জাজ বলেন, “নূন্যতম ১০% আসনে রাজনৈতিক দলগুলোকে তরুণ প্রার্থী দেবার যে বাধ্যবাধকতার কথা বলা হয়েছে সেটা অস্পষ্ট। এমপি পদে নির্বাচনে বয়স কমিয়ে ২১ করাটা বর্তমান বাস্তবতায় সম্ভব নয়। একজন সংসদ সদস্য একইসাথে সংসদ নেতা, প্রধানমন্ত্রী এবং রাজনৈতিক দলের প্রধান থাকতে পারবেন না বলে যে সুপারিশ করা হয়েছে তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এখনো বাস্তবায়নযোগ্য নয়।”
ববি হাজ্জাজ বলেন, “সদ্য গঠিত একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দিতে জনপ্রশাসন সংষ্কার কমিশন জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে নাগরিক কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছে বলে আমরা ঐকমত্য কমিশনকে জানিয়েছি। উপজেলা জননিরাপত্তা অফিসার পদে একজন এএসপি পদমর্যাদার কাউকে নিয়োগ করার ব্যাপারে আমাদের আপত্তি রয়েছে। একইসাথে আমরা প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু এবং জেলা পরিষদ বাতিলের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছি। রাজধানী মহানগর সরকার চালুর যে সুপারিশ করা হয়েছে সেখানেও আমাদের আপত্তি রয়েছে।”