জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেছেন, নির্বাচন ছাড়া ‘সংস্কার’ আসলে কোনো সংস্কার নয়। বুধবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ববি হাজ্জাজ তার পোস্টে বলেন, ‘তারা আবার মিছিলে নেমেছে। এবার তাদের স্লোগান স্বাধীনতার জন্য নয়, বিলম্বের পক্ষে।
তারা বলছে, নির্বাচন নাকি সংস্কারের শত্রু। আর তাই জনগণকে আবারও অপেক্ষা করতে হবে নিজেদের নেতা বেছে নেওয়ার অধিকার ফিরে পেতে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এই কণ্ঠস্বর চিনি। এরা সেই পুরনো রাজনৈতিক প্রাণী, যারা অন্ধকারে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে চায়। যারা মুখে বিপ্লবের বুলি আওড়ায়, কিন্তু জনগণের জবাবদিহিতার ভয়ে কাঁপে। আজ তারা এনসিপি আর জামাতের পতাকার নিচে দাঁড়িয়ে দেশের মানুষকে বোঝাতে চাইছে— নির্বাচন চাইলে নাকি আপনি বিপ্লবের বিরোধী। এটি মিথ্যা। বিষাক্ত মিথ্যা। হাসিনার নয়-মাথাওয়ালা ফ্যাসিবাদী দানব যেমন মিথ্যা বলেছিল, ঠিক তেমনই।’
এনডিএম চেয়ারম্যান বলেন, দশকেরও বেশি সময় আমরা সেই দানবের বিরুদ্ধে লড়েছি—গলিতে, ক্যাম্পাসে, আদালতে, রাস্তায়, লাঠি, গুলি, কারাগারের সামনে দাঁড়িয়েছি, সঙ্গীদের দাফন করেছি। আমরা এই লড়াই এ কারণে করিনি, যাতে একদল নতুন, অঘোষিত ‘মুক্তিদাতা’ এসে স্বৈরশাসকের চেয়ারে বসে আমাদের আবার বলে—‘তোমরা এখনো প্রস্তুত নও।’
তিনি বলেন, এই বিপ্লব ছিল কোনো ব্যক্তি বা দলকে সরানোর জন্য নয়—এই নীতিকে ধ্বংস করার জন্য যে, জনগণের সম্মতি ছাড়া ক্ষমতা দখল করা যায়। আর আজ, এই গরম রাস্তায়, যারা ‘নির্বাচন ছাড়া সংস্কার’ চাইছে, তারা আসলে এক অগণতান্ত্রিক ক্ষমতাকে অন্য এক অগণতান্ত্রিক ক্ষমতায় বদলে দিতে চাইছে।
গণতন্ত্র টিকে থাকে জবাবদিহিতার ভিত্তিতে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, “নির্বাচনের মাধ্যমেই নেতা জনগণের কাছে জবাবদিহি করে। নির্বাচন ছাড়া ‘সংস্কার’ আসলে কোনো সংস্কার নয়—এটা কেবল একই প্রাসাদের রং বদল, যেখানে তালা সবসময় ভেতর থেকে লাগানো থাকে। জনতার নামে ভিড়ের শাসন আসলে কারো কাছে জবাবদিহি করে না। আজকের জনতা কাল অন্য স্লোগান দেয়, আর তখনই ক্ষমতা জনগণের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।”
ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘স্পষ্ট করে বলি—যারা আজ নির্বাচন ঠেকাতে চাইছে, তারা বিপ্লবের রক্ষক নয়; তারা কবর খুঁড়ছে, যেখানে জন্ম নেবে নতুন এক স্বৈরশাসন। স্বৈরশাসক নেই। এখনই আমাদের একবারের জন্য সুযোগ আছে—ক্ষমতা সত্যিকার অর্থে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার। এই সুযোগ বিলম্ব সহ্য করবে না। যারা রাস্তায় নির্বাচনের দাবি ডুবিয়ে নিজেদের উচ্চাকাঙ্ক্ষার আওয়াজ তুলছে—তাদের কাছে আমরা দেশ তুলে দিতে পারি না।’
তিনি আরো বলেন, ‘এনসিপি আর জামায়াত চাইলে মিছিল করুক— কিন্তু দেশ যেন মনে রাখে, কে জনগণের অধিকার রক্ষা করেছে আর কে সেই অধিকার চুরি করতে চেয়েছে। আমাদের বিপ্লব তখনই শেষ হবে, যখন নয়-মাথাওয়ালা দানবের সব মাথা কেটে ফেলা হবে—আর মুকুট তার প্রকৃত মালিক, জনগণের হাতে ফিরবে।’