ঢাকা: জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) কেন্দ্রীয় কমিটির ১৬ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। বুধবার (১১ জানুয়ারি) জরুরি বৈঠকে ১৬ জনের নাম অনুমোদন দেওয়া হয়ছে।
কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন এনায়েত কবির ও আবু সৈয়দ। যুগ্ম মহাসচিব পদে আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও লাকি হুসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সৈয়দা সাদিয়া মেহজাবীন ও এটিএম মমতাজুল করিম, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক পদে আমিরুল ইসলাম (নয়ন মুরাদ), সমবায় বিষয়ক সম্পাদক নুরুল কাদের চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক পদে তিন জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন- নুরুজ্জামান হিরা, জহিরুল ইসলাম ও হারুন অর রশিদ। এছাড়া যুগ্ম শ্রম বিষয়ক সম্পাদক পদে আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১৬ জন নতুন সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।জরুরি বৈঠকে কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলা কমিটি গঠন, তৃণমূলের কর্মীসভা এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ে দলীয় চেয়ারম্যানের সফর কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে বৈঠক শেষে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী।
ওই বৈঠকে মোমিনুল আমিনকে দলের চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার খবর জানা গেছে।
প্রায় তিন মাস আগে নতুন এ দলটির চেয়ারম্যান হিসেবে ববি হাজ্জাজ ও মহাসচিব হিসেবে এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়। শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে।
ঢাকাঃ আওয়ামী লীগ-বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ সকল রাজনৈতিক দলকে আগামী ২৪ এপ্রিল দুপুর ২.০০ ঘটিকায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন- এনডিএম এর আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। জনাব ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন এনডিএম এর আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরাও উপস্থিত থাকবেন।
বুধবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে এনডিএম এর পক্ষে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দা সাদিয়া মাহজাবিন ও এডভোকেট কায়সারুল আলম কায়সার ।।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেন এনডিএম এর যুগ্ম বিভাগীয় সম্পাদক পারভেজ খান ও জিসান খান। খালেদা জিয়ার পক্ষে আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করেন চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারি শিমুল বিশ্বাস। শিমুল বিশ্বাস বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে এনডিএমকে সাধুবাদ জানান ও দলের সমৃদ্ধি কামনা করেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেন এনডিএম এর যুগ্ম বিভাগীয় সম্পাদক পারভেজ খান ও জিসান খান। এসময় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এনডিএম এর জন্য শুভকামনা জানান ও দলের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের জন্য দোয়া করেন।
এছাড়া বাংলাদেশ-ন্যাপ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি- এলডিপি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, জাতীয় পার্টি- জেপি, ইসলামী ঐক্য আন্দোলন, ইসলামীক ফ্রন্ট বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এর আগে ১১ এপ্রিল মঙ্গলবার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) , জনাব আ স ম আব্দুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি( সিপিবি), গণ সংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও নাগরিক ঐক্যকে।
অনলাইন ডেস্ক ॥ জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির উদ্যোগে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে “প্রস্তাবিত বাজেট ২০২২-২৩ এনডিএম’র প্রতিক্রিয়া এবং পর্যালোচনা” শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার (১৫ই জুন) বিকাল ৩টায় এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের সভাপতিত্বে উক্ত পর্যালোচনা সভায় প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে দলের বিশ্লেষণ এবং প্রতিক্রিয়া লিখিত আকারে উপস্থাপন করেন এনডিএম এর যুগ্ম মহাসচিব মোমিনুল আমিন।
সভাপতির বক্তব্যে জনাব ববি হাজ্জাজ বলেন, “প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আমাদের আনুষ্ঠানিক লিখিত বিশ্লেষণে আমরা দেখিয়েছি জনগণকে কষ্টে রেখে শুধু ঋণের সুদ পরিশোধে এই বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮০ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে জনমতের প্রতিফল নিয়ে এক আন্তর্জাতিক মানের জরিপে বাংলাদেশের স্কোর মাত্র ১৩ যা প্রতিবেশী দেশ নেপাল থেকেও কম। দেশের টিআইএন আছে এমন জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশি কর প্রদান না করলেও রাজস্ব আহরণের অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে সাধারণ মানুষ যখন জর্জরিত তখন এই বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। কর্পোরেট কর হার তৃতীয়বারের মত কমানো হলেও বৃহৎ শিল্পোগোষ্ঠী দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করবে কিনা সেব্যাপারে নেই কোন সুনির্দিষ্ট ঘোষণা। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তারা এই বাজেটে আবারও উপেক্ষিত। ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো না হলেও উচ্চ বেতনভুক্তদের সুবিধা দেয়া হয়েছে। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যখাতে আমরা আশানরুপ বরাদ্দ পাই নাই। বিশাল পরিচালন বা অনুন্নয়ন ব্যয় হ্রাস করা গেলে বাড়ানো যেত উন্নয়ন ব্যয়, ভর্তুকি এবং প্রণোদনা। সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত কোন পরিকল্পনা এই বাজেটে তুলে ধরা হয় নাই। এডিপির ১২৪৩ টি প্রকল্পের গড় মেয়াদকাল ৪ বছর ৬ মাস এবং ২৯.৭% প্রকল্প ইতোমধ্যে ৪ বার পর্যন্ত বর্ধিত হয়েছে। ২০টি মেগা প্রকল্পে এডিপির ৩১.২% বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতি জনগণের অর্থ অপচয় করছে। বিস্তারিত বিশ্লেষণ আমাদের লিখিত উপস্থাপনায় দেখানো হয়েছে।”
উক্ত পর্যালোচনা সভায় আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জনাব সুব্রত চৌধুরী, মহাসচিব, গণফোরাম, অধ্যপক আশরাফ আলী আকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, কাজী আবুল খায়ের, মহাসচিব, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, মহাসচিব, জাগপা, এ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম, মহাসচিব, বাংলাদেশ কংগ্রেস, মজিবুর রহমান মঞ্জু, সদস্য সচিব, এবি পার্টি, হামদুল্লাহ মেহেদী, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাবুল সরদার চাখারী, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পিপলস পার্টি, ক্বারি আবু তাহের, চেয়ারম্যান, এনডিপি, ফারুক হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ, মহিউদ্দিন আহমেদ, সভাপতি, মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন প্রমুখ রাজনৈতিক দলের জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট প্রতিনিধিবৃন্দ।
সঞ্চালনায় ছিলেন এনডিএম এর সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন নুরুজ্জামান হীরা।
সদ্য সমাপ্ত খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেছেন, ভোট কারচুপি আর অনিয়মের কারণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা গণমাধ্যমের সামনে আসেন নাই।
দলটির মিডিয়া কর্মকর্তা মো. ফজলে এলাহী তুষার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞাপ্তিতে ববি হাজ্জাজ এমন প্রতিক্রিয়া জানান।
গত ১৫ মে (মঙ্গলবার) খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে গণমাধ্যমে বেশকিছু ভোটকেন্দ্র দখল এবং ভোট কারচুপির চিত্র উঠে আসে।
এ ব্যাপারে ববি হাজ্জাজ বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) শুরুতে নারায়ণগঞ্জ এবং কুমিল্লা সিটিতে ভালো নির্বাচন উপহার দিয়ে আশা জাগালেও ক্রমশ তাদের কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। সদ্য সমাপ্ত খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে যেভাবে প্রশাসন কাজ করেছে তা দেখে জাতি হতাশ।
তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে নতুন নতুন মামলায় সরকারি দলের প্রতিপক্ষের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ভোটের আগে পোলিং এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া এবং ভোটের দিন কেন্দ্র দখল আর জাল ভোটের মহোৎসব দেখেও ইসি চুপ ছিলো।
সদ্য নির্বাচিত খুলনার নগরপিতা তালুকদার আব্দুল খালেক এই নির্বাচনের মাধ্যমে তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে কালিমা লেপন করলেন। অন্যদিকে দল হিসাবে বিএনপি গণতন্ত্রের পক্ষে এবং খুলনাবাসীর ভোটাধিকার রক্ষায় সোচ্চার না হলেও তাদের মনোনীত প্রার্থী ও দলটির কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। এনডিএম তাকে অভিনন্দন এবং গণতন্ত্র রক্ষায় এনডিএম’র সাথে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছে, বলেন ববি হাজ্জাজ।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, এ ধরনের একটি বিতর্কিত নির্বাচন করার পর লজ্জায় গণমাধ্যমের সামনে আসেন নাই প্রধান নির্বাচন কমিশনার। ইসির কাছে দাবি জানাচ্ছি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী কাজ করুন এবং দ্রুত নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি শেষ করুন।
একইসঙ্গে গাজীপুরের মতো ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের স্থগিত উপ-নির্বাচনও দ্রুত অনুষ্ঠিত করার আহবান জানান তিনি।
ইতিমধ্যে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপও সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, খুলনা সিটি নির্বাচনে ৩২ শতাংশ কেন্দ্রে সহিংসতা অনিয়ম হয়েছে।
শিগগিরই জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফেরত দেবে এনডিএম : ববি হাজ্জাজ
সততা, নিষ্ঠা, বিচক্ষণতা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে একজন দক্ষ নেতা তার দলকে এগিয়ে নিয়ে যায়। হয়ে ওঠেন কর্মী ও দলীয় আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। ঠিক তেমনি একজন দক্ষ নেতা ববি হাজ্জাজ। সদা হাস্যোজ্জ্বল এই নেতা ইতিমধ্যে হাজার হাজার তরুণের প্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। গত ২৪ এপ্রিল ছিল তার নিজ হাতে গড়া রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-এনডিএম-এর প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ডেসটিনি অনলাইনকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন তার রাজনৈতিক ভাবনা ও আগামী নির্বাচনকে নিয়ে।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- সোলায়মান সুলতান।
ডেসটিনি অনলাইন : গত এক বছরে এনডিএমের সফলতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
ববি হাজ্জাজ : গত এক বছরে আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল গণমানুষের কাছে পৌঁছানো এবং তাদের সাথে মিশে যাওয়া, আমরা সেটা খুব ভালোভাবে পেরেছি এবং আমাদের বিশ্বাস, আগামীতে যে পরিকল্পনা নেয়া হবে সেটা সঠিক বাস্তবায়ন ঘটাতে পারব।
ডেসটিনি অনলাইন : গত এক বছরে জাতীয় ইস্যুতে এনডিএমের ভূমিকা কেমন ছিল?
ববি হাজ্জাজ : যেহেতু আমরা জাতীয় পর্যায়ের একটি রাজনৈতিক দল, জাতীয় যেকোন ইস্যুতে আমাদের স্টান্ড থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সাম্প্রতিক সময়ে কোটা আন্দোলনে এনডিএম-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক যুব আন্দোলন ও জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলন গত জানুয়ারি মাস থেকে কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু করে। তারপর গত ৬ মার্চ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক যুব আন্দোলন কোটাবিরোধী সমাবেশ করে। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল কোটার বিরুদ্ধে একটা আওয়াজ তোলা। তারপর চলতি মাসের প্রথম দিকে যখন রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে, তখন আমরাও সেটা রাজনৈতিক একটা রূপ দেয়া সমীচীন মনে করিনি।পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির অপসারণে আমদের শক্ত রাজনৈতিক অবস্থান ছিল।
ডেসটিনি অনলাইন : শিক্ষক হিসেবে আপনার দৃষ্টিতে পাশ্চাত্য রাজনীতি এবং আমাদের দেশীয় রাজনীতির মূল পার্থক্য কোথায়?
ববি হাজ্জাজ : পাশ্চাত্য এবং আমাদের দেশের রাজনৈতিক চর্চার মূল পার্থক্য হচ্ছে জবাবদিহিতা। ওখানে জবাবদিহিতা আছে এখানে নেই। আমরাও নির্বাচনী গণতন্ত্র চর্চা করি, তারাও নির্বাচনী গণতন্ত্র চর্চা করে। নির্বাচনী গণতন্ত্রের সাথে পাশ্চাত্যে জবাবদিহিতা আছে, আমাদের নেই।
ডেসটিনি অনলাইন : আপনি বলতে চাচ্ছেন আমাদের দেশের রাজনৈতিক সংকটের মূল কারণ জবাবদিহিতার অভাব?
ববি হাজ্জাজ : শুধু জবাবদিহিতার অভাব বললে কিঞ্চিৎ ভুল হবে; তবে নির্বাচনী গণতন্ত্রের সাথে জবাবদিহিতা আনা গেলে এ সমস্যা সমাধান হবে।
ডেসটিনি অনলাইন : এনডিএমের অঙ্গীকার দেশ হবে জনতার-এটা বাস্তবায়নের জন্য কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন?
ববি হাজ্জাজ : প্রথমত, আমরা দেশ জনতার হাতে তুলে দিতে চাই জবাবদিহিতার মাধ্যমে। দ্বিতীয়ত, আমরা একটি জবাবদিহিতামূলক দল গঠন করেছি অর্থাৎ আমাদের দল শুধু কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হবে না আমাদের দল সৃষ্টি হয়েছে তৃণমূল থেকে এবং তৃণমূল থেকেই দল পরিচালিত হবে।
ডেসটিনি অনলাইন : এনডিএম কি গণমাধ্যম-বিমুখ রাজনীতি করে?
শিগগিরই জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফেরত দেবে এনডিএম : ববি হাজ্জাজ
ববি হাজ্জাজ : এনডিএম গণমাধ্যম বিমুখ নয়। গণমাধ্যম তো নিজের গতিতে চলে, তার নিজের একটা চলার আকার আছে। গণমাধ্যম এই মুহূর্তে সরকার ও সরকারবিরোধী এই দুই পথ অবলম্বন করছে। আমরা সরকারের সাথে নেই, যেহেতু আমরা জনগণের স্বার্থে রাজনীতি করি, সেহেতু প্রত্যেকটি আওয়াজও সরকারের বিরুদ্ধে হয় না। কেউ কেউ আমাদের নিবন্ধনের জন্য অপেক্ষা করছেন। হয়তো নিবন্ধনটা হয়ে গেলে অনেকেই আমদের নিউজ কাভারেজে আসবেন।
ডেসটিনি অনলাইন : অনেকেই মনে করেন, নির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা বা পাশ্চাত্যের ইন্ধনে ববি হাজ্জাজ রাজনীতিতে এসেছে, এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি?
ববি হাজ্জাজ : দেখুন, সবাই সবার মত করে চিন্তা করবে। সবার চিন্তা তো আর আমি দূর করতে পারব না। একজন ব্যক্তিকে কেউ বলবে সুদর্শন আবার কেউ বলবে সুদর্শন নয়। এখন ওই ব্যক্তির কাজ না দৌড়ে দৌড়ে সবার কাছে গিয়ে প্রমাণ করা, তিনি সুদর্শন কি, সুদর্শন না। তিনি তার কাজ করে যাবেন।
ডেসটিনি অনলাইন : তাহলে ববি হাজ্জাজ তথা এনডিএমের শক্তির মূল উৎস কি?
ডেসটিনি অনলাইন : আগামী নির্বাচনকে ঘিরে এনডিএমের পরিকল্পনা কি?
ববি হাজ্জাজ : প্রথমত, নিবন্ধন প্রাপ্তির অপেক্ষায় আছি, দ্বিতীয়ত মার্কা। যেহেতু আমরা দেশের দুই-তৃতীয়াংশ স্থানে ছড়িয়ে গিয়েছি। ইতোমধ্যে আগামী নির্বাচনের জন্য আমরা অনেক প্রার্থী নির্বাচন করে রেখেছি। যদিও আমাদের পদ্ধতি হচ্ছে লোকাল প্রাইমারি গভর্মেন্ট অর্থাৎ লোকাল কমিটিগুলো ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করবে কারা মনোনয়ন পাবে। আমরা ইতোমধ্যে ৬৩টি আসনের প্রার্থী নির্বাচন করেছি। পাশাপাশি বাকি কমিটিগুলো থেকে চেষ্টা করছি ভালো প্রার্থী বের করে আনতে। আশা করছি, নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার পূর্বে দেশব্যাপী সবগুলো আসনে প্রার্থী নির্ণয়ে সক্ষম হব।
ডেসটিনি অনলাইন : নির্বাচনে কোনো জোটের সাথে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?
ববি হাজাজ : নির্বাচনে কোনো জোটের সাথে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে এনডিএমের নেই। নির্বাচন এনডিএম, এনডিমের মতো করেই করবে। তারপর নির্বাচনের পর পার্লামেন্ট জোট হবে কি না তা তখনকার রাজনীতির উপর নির্ভর করবে।
ডেসটিনি অনলাইন : গত ৫ জানুয়ারি ২০১৪ নির্বাচনের বিপক্ষে গণমাধ্যমে আপনাকে বেশ সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়। তাহলে ববি হাজ্জাজের কাছে আগামী নির্বাচন একাদশ না দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন?
ববি হাজ্জাজ : ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অসাংবিধানিক ছিল এটা কিন্তু আমি তখনো বলিনি, এখনও বলছি না। তবে হ্যাঁ, পছন্দনীয় ছিল না নির্বাচনটা। ঐ নির্বাচন ভালো হয়নি। দেশের জনগণের কল্যাণে হয়নি, কেননা জনগণ ভোট দিতে পারেনি। সুতরাং আইন বা সাংবিধানিকভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করবে এনডিএম।
ডেসটিনি অনলাইন : এক বছর পূর্তিতে জনগণের জন্য রাজনৈতিক কোনো চমৎকারিত্ব আছে কিনা?
ববি হাজ্জাজ : রাজনৈতিক চমৎকার কিছু নেই। শুধু একটা কথা বলার আছে। জনগণকে সেবা করতে, জনগণের জন্য কাজ করতে, জনগণকে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এনডিএম রাস্তায় নেমেছে, রাজনীতিতে এসেছে। খুব শিগগিরই, খুব শিগগিরই জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে পৌঁছে দেবে এনডিএম।
পুলিশ ও ছাত্রলীগ এখন জনগণের প্রতিপক্ষ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। তিনি বলেন, প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় ছাত্রলীগের তথাকথিত সোনার ছেলেদের অপকর্ম দেখছি তাতে বলতেই হচ্ছে ছাত্রলীগ আর পুলিশ এখন জনগণের প্রতিপক্ষ।
মঙ্গলবার বিকেলে দলের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ছাত্র ও যুব সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
ববি হাজ্জাজ বলেন, যেদেশে পতিত স্বৈরাচার হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বানানো হয়, সংসদে তাবেদার বিরোধী দল রাখা হয় সেদেশে মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিনিয়ত ক্ষুণ্ন হয়।
তিনি বলেন, যেভাবে কোটা বিরোধী আন্দোলনে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর পুলিশি রাবার বুলেট, টিয়ারশেল আর ছাত্রলীগের হামলা দেখেছি, অতীতে বিভিন্ন দাবি দাওয়া আদায়ে শান্তিপূর্ণভাবে সমবেত হওয়া জনগণের ওপর পুলিশের হামলা-মামলাও দেখেছি, বিভিন্ন নির্বাচনে জালভোট প্রদানকালে পুলিশকে নীরব থাকছে তাতে বলতেই হচ্ছে ছাত্রলীগ আর পুলিশ এখন জনগণের প্রতিপক্ষ।
ববি বলেন, মাত্র ১ বছরে আমরা দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশে ছড়িয়ে পড়েছি। আমাদের এই ঐতিহাসিক সাফল্যের কারিগর নতুন প্রজন্মের যেই বিশাল অংশ তাদের দুই সংগঠনের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হলো আজ। বাংলাদেশে তারুণ্যের যে নৈতিক অবক্ষয়, নতুন প্রজন্মের মধ্যে যেই রাজনীতি বিমুখ মনোভাব, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী আর অগণিত বেকার যুবকদের পক্ষে নেতৃত্বের যে শূন্যতা সেটা যুব আন্দোলন এবং ছাত্র আন্দোলনের নবগঠিত কমিটি দূর করবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমরা নতুন নিবন্ধিত দল হিসাবে ইসির সঙ্গে আলোচনায় বসব।
নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে ববি বলেন, নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত করতে অবশ্যই প্রশাসনে রদবদল করতে হবে, নিরাপত্তার স্বার্থে সেনা মোতায়ন হলে এনডিএম স্বাগত জানাবে। সরকারি দলের ইচ্ছায় গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এমপিদের প্রচারণার সুযোগ করে দেবার পাঁয়তারাকে নিন্দা জানাই। জনগণের ভোটাধিকার রক্ষায় এনডিএমের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে সজাগ থাকতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ববি।
অনুষ্ঠানে মো. ইসমাইল হোসেনকে সভাপতি এবং মাসুদ রানা জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ঘোষণা দেয়া হয়। অন্যদিকে, লায়ন নুরুজ্জামান হীরাকে সভাপতি এবং মো. আরিফুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়।
ছাত্র ও যুব সমাবেশে অংশ নিয়ে আরো বক্তব্য রাখেন এনডিএমের উচ্চ পরিষদ সদস্য শাফিন আহমেদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক খোকন চৌধুরীসহ দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান (শিল্প ও বাণিজ্য) এনায়েত কবির। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম।